কিছুক্ষণ হলো একটা স্টেশনে এসে দাঁড়ালাম;
বসলাম না; দাঁড়ালাম।
গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে –
আমি দাঁড়ালাম।
আমি স্টেশনে দাঁড়িয়ে;
যারা যাচ্ছেন অথবা আসছেন
নিজ নিজ ঘরে, নীড়ে, প্রিয়জনের কাছে
তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
এইতো একজন নারী নামলেন কম্পার্টমেন্ট থেকে-
তার হাতে ছিমছাম ব্যাগ-
ফোনটাকে কান আর স্কন্ধদেশের সাহায্যে ঠেসে ধরে
কথা বলতে বলতে আগাচ্ছেন;
তার অপেক্ষায় কেউ উন্মুখ –
হয়ত তার বাবা, প্রেমিক অথবা তার শিশু।।
যারা স্টেশনে নামছেন অথবা উঠছেন
কিংবা,
ছেড়ে যাওয়া মানুষের অপেক্ষায়
তাদেরকে শ্রদ্ধা;
তোমাদের অপেক্ষাকে আমার সশ্রদ্ধ উষ্ণ শুভেচ্ছা৷
আমি দেখছি মানুষের হেঁটে যাওয়া
দেখছি মানুষ যেতে যেতে হঠাত থেমে যাচ্ছে
থেমে গিয়ে –
একজন আরেকজনকে তীব্র আলিঙ্গনে জড়াচ্ছেন।
গাড়ি চেপে এই পৃথিবীর এক স্থান থেকে অন্যত্র চলে যাওয়া;
কেউ ছেড়ে যাচ্ছেন
কেউবা আবার যাচ্ছেন আসবেন বলে;
কেউবা অপেক্ষায় আছেন স্টেশন চত্বরে
প্রিয় মানুষকে অভ্যর্থনা জানাতে।
আমি মানুষের এই মেলবন্ধন আর প্রস্থান দেখছি-
মনে মনে আঁকছি তীব্র ট্রাজেডি –
আর;
কিছুক্ষণ পর পর ছেড়ে যাওয়া গাড়ির তীব্র সাইরেন শুনে
বুকের মধ্যে কষছি তীব্র গণিত;
হিসেব করছি ছেড়ে যাওয়া গাড়ির গতিবেগ, যাত্রীদের ভর,
মনের সমন্বিত দুঃখবোধ, আর রক্তের গতি প্রকৃতি।
রাতের শেষ গাড়িটা ছেড়ে গেলে
স্টেশনে এবার আমি একটু বসি;
কথা বলি মনে মনে গার্ড, টিকিট মাষ্টার, আর লোহার দরজাদের সাথে-
আমি যা যা ভাবি; ওরা তা রোজ দেখে।
ওরা বলে
মানুষ আসলে যাত্রী নয়;
বলে – মানুষের বুকও স্টেশন –
মানুষ ওঠে নামে।